শুক্রবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
শুক্রবারও EUR/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত ছিল, এবং পুরো সপ্তাহজুড়ে ইউরোর মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে, যদিও বেশিরভাগ সময় এর জন্য কোনো সুস্পষ্ট কারণ ছিল না। কিছু প্রতিবেদনের ফলাফল ইউরোর জন্য সহায়ক ছিল—যেমন ইউরোজোনের প্রত্যাশার চেয়ে ইতিবাচক জিডিপি প্রতিবেদন এবং মার্কিন খুচরা বিক্রয় প্রতিবেদনের দুর্বল ফলাফল। তবে, সামগ্রিকভাবে সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট এখনো মার্কিন ডলারের পক্ষে অনুকূল রয়েছে। বিশেষ করে, মার্কিন মূল্যস্ফীতি প্রতিবেদন চতুর্থ মাসের মতো ক্রমাগত ভোক্তা মূল্য বৃদ্ধির ইঙ্গিত দিয়েছে, এবং কংগ্রেসে জেরোম পাওয়েলের সাম্প্রতিক বক্তব্য নিশ্চিত করেছে যে ২০২৫ সালে সুদের হার কমানোর প্রক্রিয়া খুবই ধীরগতির হবে। যদি দেশটির মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকে, তাহলে ফেডারেল রিজার্ভ হয়তো পুরোপুরিভাবে সুদের হার কমানোর পরিকল্পনা বাতিল করতে পারে।
এই পরিস্থিতিতে স্বাভাবিকভাবেই মার্কিন ডলারের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ার কথা ছিল; তবে, মার্কেটের ট্রেডাররা এই তথ্যগুলোকে উপেক্ষা করেছে এবং এর পরিবর্তে তারা ইউরোর জন্য ইতিবাচক প্রতিবেদনগুলোর প্রতি প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। এটি আমাদের পূর্বাভাসের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ, কারণ আমরা আগেও উল্লেখ করেছি যে মূল বিষয় হলো দৈনিক টাইমফ্রেমে চলমান ঊর্ধ্বমুখী কারেকশন, যা এখনো সম্পন্ন হয়নি।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
শুক্রবার, ৫-মিনিট টাইমফ্রেমে একটি বাই সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল। ইউরোপীয় ট্রেডিং সেশনের শুরুতে, মূল্য 1.0451 লেভেল থেকে রিবাউন্ড করেছিল, যার পর পুরো দিন ধরে এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত ছিল। ইউরোর মূল্য নিকটবর্তী লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে ব্যর্থ হলেও ৩০-৪০ পিপস পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছিল। নতুন ট্রেডাররা সহজেই এই মুভমেন্ট থেকে মুনাফা করতে পারতো, কারণ প্রায় যেকোনো জায়গা থেকে এই পেয়ারের বাই ওপেন করাই পজিশন লাভজনক হতে পারতো।
সোমবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, বর্তমানে মাঝারি মেয়াদে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা বিরাজ করছে। যদিও স্থানীয় পর্যায়ে এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা কিছু সময়ের জন্য বাধাগ্রস্ত হয়েছিল, তবে তা পুনরায় শুরু হয়েছে। আমরা এখনো আশা করছি যে ইউরোর মূল্য হ্রাস পেতে পারে, কারণ মৌলিক এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এখনো মার্কিন ডলারের পক্ষে কাজ করছে। তবে, দৈনিক টাইমফ্রেমে চলমান ঊর্ধ্বমুখী কারেকশন আরও কয়েক সপ্তাহ ধরে অব্যাহত থাকতে পারে।
সোমবার, মার্কেটে আবারো অযৌক্তিক এবং অস্থির মুভমেন্ট দেখা যেতে পারে। যেহেতু দৈনিক টাইমফ্রেমে কারেকশনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে, তাই মার্কেটে এই পেয়ারের মূল্যের আরও ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট দেখা যেতে পারে। তবে, একইসাথে পুলব্যাক এবং নিম্নমুখী কারেকশনেরও সম্ভাবনা রয়েছে।
৫-মিনিট টাইমফ্রেমে, নজর রাখার গুরুত্বপূর্ণ লেভেলগুলো হলো: 1.0156, 1.0221, 1.0269-1.0277, 1.0334-1.0359, 1.0433-1.0451, 1.0526, 1.0596, 1.0678, 1.0726-1.0733, 1.0797-1.0804, 1.0845-1.0851।
সোমবার, ইউরোজোন বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কোনো গুরুত্বপূর্ণ বা গৌণ গুরুত্বসম্পন্ন অর্থনৈতিক ইভেন্ট নির্ধারিত নেই। তাই, সম্ভবত আজ সোমবার আরেকবার এই পেয়ারের মূল্যের "শান্ত" মুভমেন্ট দেখা যেতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (বাউন্স বা লেভেলের ব্রেকথ্রু)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন খোলা হয় (যা টেক প্রফিট শুরু করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ফলস সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যালের গঠন নাও হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) কাছাকাছি লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: মূল্য 15 পিপস উদ্দেশ্যমূলক দিকে যাওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।