বৃহস্পতিবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
বৃহস্পতিবার EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের অত্যন্ত স্বল্প মাত্রার অস্থিরতা পরিলক্ষিত হয়েছে, যা মূলত টেকনিক্যাল বিষয়ের কারণে প্রভাবিত হয়েছে। অ্যাসেন্ডিং ট্রেন্ডলাইন অতিক্রম করতে ব্যর্থ হওয়ার পর, এই পেয়ারের মূল্য একটি রিবাউন্ডের সম্মুখীন হয়, যার ফলে আরেকবার ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট দেখা দেয়। তবে, এটি মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে, দৈনিক টাইমফ্রেমে এই পেয়ারের মূল্য ফ্ল্যাট রেঞ্জের ঊর্ধ্বসীমার কাছাকাছি রয়েছে। ফলস্বরূপ, অদূর ভবিষ্যতে এই পেয়ারের মূল্য বিপরীতমুখী হয়ে নিম্নমুখী হতে পারে এবং ইউরোর দরপতনের সম্ভাবনা খুব বেশি বলে মনে হচ্ছে।
অতিরিক্তভাবে, সামষ্টিক অর্থনৈতিক ও মৌলিক প্রেক্ষাপটের সাথে মার্কেটে পরিলক্ষিত মুভমেন্টের মধ্যে প্রায় কোন সম্পর্ক দেখা যাচ্ছে না। গতকাল, ইউরোজোন থেকে কোন উল্লেখযোগ্য প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়নি, এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে মাত্র দুটি স্বল্প গুরুত্ব সম্পন্ন প্রতিবেদন পাওয়া গেছে। তা সত্ত্বেও, পুরো দিন ধরে এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বিরাজ করেছে। যদিও ইউরোর মূল্য স্থিতিশীল বৃদ্ধি প্রদর্শন করেছে, আমরা মনে করি না যে এটি দীর্ঘমেয়াদে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার সূচনা নির্দেশ করে। বর্তমানে, দৈনিক টাইমফ্রেম পর্যবেক্ষণ করলে সবচেয়ে বেশি তথ্য পাওয়া যাবে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
৫ মিনিটের চার্টে, বৃহস্পতিবার শুধুমাত্র একটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল, যদি এটিকে সিগন্যাল বলা যায়। ইউরোপীয় সেশনের সময়, এই পেয়ারের মূল্য 1.0433–1.0451 রেঞ্জে প্রবেশ করে এবং পরবর্তী 8-9 ঘন্টা এই রেঞ্জের উপরে কনসলিডেশনের চেষ্টা করে, যা অবশেষে ঘটেছে। এর পরে এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট অব্যাহত ছিল, যার ফলে ইউরোর মূল্য প্রায় 30 পিপস বৃদ্ধি পায়।
শুক্রবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
প্রতি ঘণ্টার টাইমফ্রেমে, বর্তমানে মধ্যমেয়াদে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা বিরাজ করছে এবং স্থানীয়ভাবেও ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা সৃষ্টি হয়েছে। মৌলিক এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক পটভূমি ইউরোর তুলনায় মার্কিন ডলারের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি অনুকূল থাকায় ইউরোর দরপতনের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে, দৈনিক টাইমফ্রেমে এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী কারেকশন হতে পারে যা আরও কয়েক সপ্তাহ ধরে চলতে পারে। প্রতি ঘণ্টার চার্টে, প্রাথমিকভাবে এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী মুভমেন্ট পুনরায় শুরু হওয়ার আগে আমরা বেশ কয়েকবার প্রবণতা পরিবর্তনের লক্ষ্য করতে পারি।
শুক্রবার, এই পেয়ারের মূল্যের অত্যন্ত অনিয়মিত মুভমেন্ট দেখা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে কিন্তু গতকালের তুলনায় বেশি অস্থিরতা থাকবে। আজকের সামষ্টিক অর্থনৈতিক পটভূমি বিশেষভাবে শক্তিশালী নয়, তবে অনেক প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে যা বাজার পরিস্থিতিকে প্রভাবিত করতে পারে।
৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে, পর্যবেক্ষণযোগ্য গুরুত্বপূর্ণ লেভেলগুলো হল 1.0156, 1.0221, 1.0269–1.0277, 1.0334–1.0359, 1.0433–1.0451, 1.0526, 1.0596, 1.0678, 1.0726–1.0733, 1.0797–1.0804, এবং 1.0845–1.0851। শুক্রবার, ইউরোজোন, জার্মানি এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিজনেস অ্যাক্টিভিটি ইনডেক্স প্রকাশিত হবে হবে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও কনজিউমার সেন্টিমেন্ট ইনডেক্স প্রকাশ করা হবে। ইউরোপীয় সূচকগুলোর দুর্বল ফলাফলের সম্ভাবনার কারণে, আজ ইউরোর দরপতনের সম্ভাবনা বেশি বলে মনে হচ্ছে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (বাউন্স বা লেভেলের ব্রেকথ্রু)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন খোলা হয় (যা টেক প্রফিট শুরু করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ফলস সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যালের গঠন নাও হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) কাছাকাছি লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: মূল্য 15 পিপস উদ্দেশ্যমূলক দিকে যাওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।