সোমবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
সোমবার, EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা পুনরায় শুরু হয়েছিল, তবে মূল্য এখনো 1.0804 এবং 1.0952 লেভেলের মধ্যে অবস্থিত সাইডওয়েজ চ্যানেলের মধ্যে রয়েছে। আমরা আগেও উল্লেখ করেছি যে এটি কোন ঐতিহ্যবাহী সাইডওয়েজ চ্যানেল নয়, তবে গত দেড় সপ্তাহ ধরে মূলত সাইডওয়েজ মুভমেন্টই পরিলক্ষিত হয়েছে। মূল বিষয় হলো, মার্কিন ডলারের দর বৃদ্ধির কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না এবং মার্কেটের ট্রেডাররাও এটি কেনার জন্য কোনো আগ্রহ দেখাচ্ছে না। সোমবার ইউরোপীয় ট্রেডিং সেশনের সময় কোনো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশিত না হওয়া বা ইভেন্ট না থাকা সত্ত্বেও ডলারের দরপতন ঘটেছে। মার্কিন ট্রেডিং সেশনের শুরুতে খুচরা বিক্রয় সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়, যেটির ফলাফল প্রত্যাশার তুলনায় কিছুটা দুর্বল ছিল। তবে, তখন পর্যন্ত ডলারের মূল্য ইতোমধ্যেই হ্রাস পাচ্ছিল। বর্তমানে মার্কেটের ট্রেডাররা আরও যৌক্তিকভাবে ট্রেড করছে, যেখানে আগে প্রতিদিন ব্যাপক হারে ডলার বিক্রি হচ্ছিল। তবে, ট্রাম্পের নতুন শুল্ক নীতি আবারও মার্কিন কারেন্সি বিক্রির প্রবণতা সৃষ্টি করতে পারে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
সোমবার, ৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে তিনটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল। প্রথমত, রাতের বেলা মূল্য 1.0888-1.0896 এরিয়া থেকে রিবাউন্ড করেছিল, তবে এই সিগন্যালটি ভুল প্রমাণিত হয়। পরে, এই লেভেলের উপরে কনসোলিডেশন হওয়ার পর, পুনরায় রিবাউন্ড হয়, যা নতুন ট্রেডারদের জন্য বাই পজিশন ওপেন করার সুযোগ তৈরি করেছিল। সন্ধ্যার মধ্যে, এই পজিশনগুলোর মাধ্যমে প্রথম ট্রেডের ক্ষতি সম্পূর্ণভাবে পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়।
মঙ্গলবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, এখনো মধ্যমেয়াদে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা বিরাজ করছে, তবে এই প্রবণতা অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা কমছে। মৌলিক ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এখনো ইউরোর তুলনায় মার্কিন ডলারকে বেশি সমর্থন যোগাচ্ছে, তাই আমরা এই পেয়ারের মূল্য হ্রাসের প্রত্যাশা করছি। তবে, ডোনাল্ড ট্রাম্প নিয়মিতভাবে শুল্ক নীতির সিদ্ধান্ত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক অবস্থান নিয়ে মন্তব্যের মাধ্যমে ডলারের দরপতন ঘটাচ্ছেন। ফলে, মৌলিক এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক উপাদানগুলো রাজনৈতিক ও ভূরাজনৈতিক বিষয়ের কারণে প্রভাবহীন হয়ে পড়ছে।
মঙ্গলবার, যেকোনো দিকেই ইউরোর মূল্যের মুভমেন্ট হতে পারে, কারণ সামষ্টিক অর্থনৈতিক ও মৌলিক পটভূমি ধারাবাহিকভাবে এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্টকে প্রভাবিত করছে না। এছাড়াও, ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে সাইডওয়েজ মুভমেন্টের সম্ভাবনা রয়েছে, এবং মূল্য বর্তমানে এই সাইডওয়েজ রেঞ্জের উপরের দিকে অবস্থান করছে।
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে পর্যবেক্ষণযোগ্য গুরুত্বপূর্ণ লেভেলগুলো হলো: 1.0433-1.0451, 1.0526, 1.0596, 1.0678, 1.0726-1.0733, 1.0797-1.0804, 1.0845-1.0851, 1.0888-1.0896, 1.0940-1.0952, 1.1011, এবং 1.1048।
মঙ্গলবার, ইউরোজোন থেকে ZEW ইকোনমিক সেন্টিমেন্ট সূচক প্রকাশিত হবে, যা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ নয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন হবে শিল্প উৎপাদন সংক্রান্ত প্রতিবেদন, তবে দিনের বেশিরভাগ সময় এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্ট এই প্রতিবেদনগুলোর ফলাফল দ্বারা প্রভাবিত হবে না।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন ওপেন করা হয় (যা টেক প্রফিট ট্রিগার করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ভুল সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যাল নাও গঠিত হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: মূল্য 15 পিপস উদ্দেশ্যমূলক দিকে মুভমেন্ট প্রদর্শুন পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।