বুধবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
GBP/USD পেয়ারের 1H চার্ট
বুধবার, GBP/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত ছিল। ফেডারেল রিজার্ভ মূল সুদের হার অপরিবর্তিত রাখার পর এবং মার্কিন অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস হ্রাস করার পর, ডলারের মূল্য আবারও হ্রাস পেয়েছে, তবে হ্রাসের পরিমাণ যুক্তিসঙ্গত সীমার মধ্যেই ছিল। এই দরপতন আরও তীব্র হতে পারত। তবে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা স্পষ্টভাবে মন্থর হয়ে গেছে, কারণ ট্রেডাররা তাদের শেষ শক্তি দিয়ে ক্রয় করছে।
এই শক্তি ক্ষয়প্রাপ্ত হচ্ছে, কারণ গত তিন সপ্তাহে ট্রাম্পের শুল্কই ডলারের দরপতনের একমাত্র কারণ ছিল। যদিও এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, তবে এটি অনির্দিষ্টকালের জন্য ডলারের মূল্যকে নিম্নমুখী করতে পারবে না। সেইসাথে, মার্কেটের ট্রেডাররা এখন অন্যান্য সব খবর, এমনকি মার্কিন ডলারের পক্ষে থাকা ইতিবাচক প্রতিবেদনকেও উপেক্ষা করছে। তাই, আমরা মনে করি দীর্ঘদিন ধরে কারেকশন হওয়া বাকি আছে। আজকের ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের বৈঠকের ফলাফল ব্রিটিশ পাউন্ডের মূল্যের আরেকটি ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট সৃষ্টি করতে পারে, তবে এটি গুরুত্বপূর্ণ যে এই পেয়ারের মূল্যের সাম্প্রতিক দর বৃদ্ধিতে ব্যাংক অব ইংল্যান্ড এবং যুক্তরাজ্যের অর্থনীতির কোনো ভূমিকা ছিল না।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট
বুধবার ৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে চারটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল। তবে, সন্ধ্যার দিকে গঠিত দুটি সিগন্যাল স্পষ্ট কারণবশত উপেক্ষা করা উচিত ছিল। এতে 1.2980-1.2993 এরিয়ায় দুটি সেল সিগন্যাল ছিল। উভয় ক্ষেত্রেই, এই পেয়ারের মূল্য ২০ পিপসও কমেনি। এই সিগন্যালগুলো ছিল একই ধরনের, অর্থাৎ নতুন ট্রেডাররা কেবল একটি শর্ট পজিশনে এন্ট্রি করতে পারত। এমনকি সেই ট্রেডও মুনাফার সাথে ক্লোজ করা যেত, কারণ দিনের বাকি সময় এই পেয়ারের মূল্য এন্ট্রি পয়েন্টের নিচেই ছিল।
বৃহস্পতিবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, ইতোমধ্যেই GBP/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা শুরু হওয়া উচিত ছিল, তবে ট্রাম্পের গৃহীত পদক্ষেপ এটি প্রতিরোধ করে চলেছে। মধ্যমেয়াদে, আমরা এখনও 1.1800-এর দিকে GBP/USD-এর দরপতনের প্রত্যাশা করছি। তবে, ট্রাম্পের নীতিমালা ডলারকে কতদিন দুর্বল করে রাখবে তা অনিশ্চিত। এই মুভমেন্ট শেষ হলে, সব টাইমফ্রেমে টেকনিক্যাল চিত্র নাটকীয়ভাবে পরিবর্তিত হতে পারে। আপাতত, দীর্ঘমেয়াদে এখনও এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা বিরাজ করছে। ব্রিটিশ পাউন্ডের মূল্যের সাম্প্রতিক ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অযৌক্তিক ছিল না, তবে এটি খুব বেশি শক্তিশালী ও অপ্রত্যাশিত ছিল।
বৃহস্পতিবার, GBP/USD পেয়ারের মূল্যত আরও বৃদ্ধি পেতে পারে, কারণ মার্কেটের ট্রেদাররা এখন ডলার বিক্রি করার জন্য কোনো কারণের প্রয়োজন মনে করছে না। তবে, আমরা একটি নিম্নমুখী কারেকশনেরও প্রত্যাশা করছি।
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমের গুরুত্বপূর্ণ লেভেলগুলো হল: 1.2301, 1.2372-1.2387, 1.2445, 1.2502-1.2508, 1.2547, 1.2613, 1.2680-1.2685, 1.2723, 1.2791-1.2798, 1.2848-1.2860, 1.2913, 1.2980-1.2993, 1.3043, 1.3102-1.3107।
বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যের প্রধান ইভেন্ট হিসেবে ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের বৈঠক ও গভর্নর অ্যান্ড্রু বেইলির ভাষণ অনুষ্ঠিত হবে এবং বেকারত্ব ও মজুরি বৃদ্ধির প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। নির্ধারিত ইভেন্টগুলোর কারণে, মার্কেটে উচ্চ মাত্রার অস্থিরতার প্রত্যাশা করা হচ্ছে। তবে, আমরা মনে করি যে যুক্তরাজ্যের সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন এবং ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের বৈঠকের ফলাফল দীর্ঘমেয়াদে পাউন্ডকে সমর্থন করার সম্ভাবনা কম।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন ওপেন করা হয় (যা টেক প্রফিট ট্রিগার করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ভুল সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যাল নাও গঠিত হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: মূল্য 15 পিপস উদ্দেশ্যমূলক দিকে মুভমেন্ট প্রদর্শন করার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত কৌশল হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।